ছাত্রজীবনে বিনা টিকিটে ট্রেনভ্রমণের টাকা পরিশোধ করলেন প্রকৌশলী

Site Favicon প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২৫ ১৯:০৩ আপডেট করা হয়েছে: ২২ জুলাই ২০২৫ ১৯:১৮
A+A-
Reset

ছাত্রজীবনে ট্রেনভ্রমণে টিকিট কাটতেন না তিনি। বন্ধুদের সঙ্গে ট্রেনে চেপে চলে যেতেন বহু স্থানে। আবার ফিরতেন বিনা টিকিটেই। প্রকৌশলবিদ্যায় পড়ালেখা শেষে চাকরি পাওয়ার পর বিষয়টি তাঁকে নাড়া দেয়।

অনুশোচনা শুরু হয়। কিন্তু কিছুতেই তিনি এই টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ট্রেনের এক ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শকের (টিটিই) কাছে বিনা টিকিটের ভাড়া বাবদ ৫২৫ টাকা দিয়ে দায়মুক্তি নিয়েছেন। এতে তিনি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চিলাহাটিগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে। বিনা টিকিটের ভাড়া পরিশোধ করা ওই যাত্রীর নাম হোসাইন আলম (৪৫)। বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা সদরের পিয়ারাখালী মহল্লায়। তিনি নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) ঈশ্বরদী কার্যালয়ে সহকারী প্রকৌশলী পদে কর্মরত।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ট্রেনটিতে থাকা টিটিই আবদুল আলীম জানান, হোসাইন আলম বেশ কিছুদিন ধরেই ছাত্রজীবনে বিনা টিকিটে ট্রেনভ্রমণের টাকা পরিশোধ করতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু কাজটি হচ্ছিল না। রাতে তিনি ঢাকা–চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে ঈশ্বরদী ফিরছিলেন হোসাইন আলম। এ সময় তাঁর (টিটিই) সঙ্গে হোসাইনের দেখা হয়। হোসাইন বিনা টিকিটের ভাড়া পরিশোধের জন্য অনুরোধ করেন।

Top Selling Multipurpose WP Theme

কিন্তু কত টাকা নেবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না টিটিই আবদুল আলীম। পরে তিনি ট্রেনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। তাঁদের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী ট্রেনটির সর্বোচ্চ ভাড়ার ৫২৫ টাকার একটি টিকিটের টাকা নিয়ে হোসাইন আলমকে দায়মুক্তি দেন। টিটিই আবদুল আলীম বলেন, ‘চাকরিজীবনে এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম। টাকাটা গ্রহণের পর ওই প্রকৌশলী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। বিষয়টি দেখে ভালো লেগেছে। আদায়কৃত টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হবে।’

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে হোসাইন আলম বলেন, ‘ছাত্রজীবনে আমরা আনন্দের জন্য বন্ধুদের সঙ্গে অনেকবার বিনা টিকিটে ট্রেনভ্রমণ করেছি। বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। তখন টিকিট কাটার কথা ভাবনাতেই আসত না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ট্রেনভ্রমণের সময় স্মৃতিগুলো মনে পড়ে অনুশোচনা শুরু হয়। এরপর বকেয়া টাকা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু কয়েক মাস আগে চেষ্টা করেও টাকা দিতে পারিনি। পরে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের টিটিইকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলায় তিনি টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেন।’ হোসাইন আলম দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলেন, ‘এখন আমি অনুশোচনা থেকে মুক্তি পেয়েছি, মনে শান্তি লাগছে।’

আপনার পছন্দ হতে পারে