দলীয় ছাত্র রাজনীতির বাইরে থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আত্মপ্রকাশ করল ‘ইউনাইটেড স্টুডেন্টস ডেমোক্রেটিক ফোরাম (ইউএসডিএফ)’। আজ সোমবার বিকেল পৌনে ৫ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০২০-২১ বর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক তাসিন খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত হোসাইন, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম সন্ধী, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হোসেন মোহাম্মদ সাফিনসহ প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল।
লিখিত বক্তব্যে তারা দাবি করেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে তারা একটি স্বাধীন, মেধাভিত্তিক এবং অধিকারের পক্ষে লড়তে আগ্রহী ছাত্র প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। দলীয় রাজনীতির বাইরে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত এই ফোরাম নিজেদের পরিচয় দিয়েছে ‘নন-পার্টিজান গণতন্ত্রকামী ছাত্রজনতার কণ্ঠস্বর’ হিসেবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তাসিন খান বলেন, ‘আমরা কোনো দল বা গোষ্ঠীর অনুসারী নই। আমরা বিশ্বাস করি, ছাত্ররাজনীতি মানে সংঘাত নয়, বরং নীতিনির্ধারণে ছাত্রদের অংশগ্রহণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নেতৃত্ব বিকাশের জায়গা।’
প্রচলিত ছাত্র রাজনীতির সমালোচনা করে তাসিন খান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাঙ্গনে দলীয় রাজনীতির নামে সহিংসতা, ট্যাগিং ও ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। বুয়েটের আবরার, চমেকের আবিদ কিংবা রাবির রিমুর মতো সহস্র শিক্ষার্থীর রক্ত এই ফ্যাসিবাদী রাজনীতির খেসারত।’
নিজেদের সাংগঠনিক পরিচয় দিয়ে তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে, তারাই আমাদের প্রকৃত শক্তি। তাঁদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়কে হতে হবে মেধাভিত্তিক নেতৃত্ব তৈরির ক্ষেত্র, কোনো দলের রক্ষীবাহিনী তৈরির কারখানা নয়। ন্যায়ের পক্ষে রাজনীতি হতে পারে যুক্তিনির্ভর বিতর্ক, কনফারেন্স ও ডায়লগভিত্তিক। আমাদের লক্ষ্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ করে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং অধিকারের শিক্ষাঙ্গন গড়ে তোলা। ইউএসডিফ এই কাজগুলো করবে।’
তাসীন খান লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ‘এই পদক্ষেপ কারও বিরুদ্ধে নয়, এটি একটি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে। আমরা ছাত্ররাজনীতিকে পুনঃসংজ্ঞায়িত করতে চাই যেখানে নেতৃত্ব তৈরি হবে সহিংসতা নয়, মেধা ও চিন্তার মাধ্যমে।’
রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে এই সংগঠনে আত্মপ্রকাশ কিনা জানতে চাইলে রিফাত হোসাইন বলেন, ‘আমরা আসলে শুধুমাত্র রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আত্মপ্রকাশ করছি না। মূলত আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নতুন কন্ঠ হিসেবে কাজ করব। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী শব্দের নতুন সংজ্ঞা হাজির করব।’
এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে সকলকে তাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ হলেই সংগঠনের সংগ্রহ হলেই তাদের ভোটে মুখপাত্র নির্বাচিত করা হবে বলে জানানো হয়।
রাবি/মাইনুল ইসলাম রাজু