জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬ জুলাই স্বৈরাচার হাসিনার পতন দিবস উদযাপন -২০২৫ উপলক্ষে গণধিক্কার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন এলাকার মহুয়ামঞ্চে এ সমাবেশের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত বছর জুলাই আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা নিজ কার্যালয় থেকে শেখ হাসিনার ছবি নামিয়ে ফেলেন। সেই ঘটনা উল্লেখ করে সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার ছবি নামানোর কাজটি এখন যতটা সহজ মনে হচ্ছে, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ে এই কাজ ততটা সহজ ছিলো না। ছবি নামানোর মধ্য দিয়ে ওই সময়ে দেশের ১৮ কোটি মানুষের চাওয়া পূরণ করেছেন। অধ্যাপক শামীমা সুলতানা যে স্পিরিট ধারণ করেন, সেটা আমাদের ধারণ করতে হবে। অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দীনও এর পরেই ফ্যাসিস্ট হাসিনার ছবি নামিয়েছেন। এটাও আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।
উপাচার্য বলেন, আমাদের মধ্যে মতভিন্নতা থাকতে পারে , কিন্তু বিদ্বেষ থাকলে চলবে না। যদি থাকে, তাহলে আমরা পরাজিত শক্তিকে আহ্বান জানাবো। আমাদের যেকোনো সমস্যা আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান করতে হবে বলে উপাচার্য মন্তব্য করেন।
গণধিক্কার সমাবেশে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রথম ছবি নামানো বাংলা বিভাগের তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, আমি সবসময় ন্যায়ের পক্ষে কথা বলি। শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি সবসময় সোচ্চার ছিলাম। ফ্যাসিস্ট হাসিনা শিক্ষার্থীদের হত্যা করছিলেন। শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানের মত। আমি তাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছি। আমার মনে হয়েছে একজন খুনির ছবি আমার কক্ষে রাখতে পারিনা। সেই সময় আমি চাকরির পরোয়া করিনি। জীবনের পরোয়া করিনি। আমার এই বোধ, আমার সাহস যুগিয়েছে। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা যা করেছে তার প্রতিটি দিনের জন্য আমি তাকে ধিক্কার জানাই।
সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও ‘৩৬ জুলাই স্বৈরাচার হাসিনার পতন দিবস উদযাপন-২০২৫’ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. শামছুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দীন ও প্রক্টর অধ্যাপক এ. কে. এম. রাশিদুল আলম প্রমুখ।
এর আগে শনিবার সকাল সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনের সামনে মহুয়াতলায় ‘জুলাই ম্যারাথন’ ও দিনব্যাপী রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মো. শামছুল আলম। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার, মেডেল ও সনদ প্রদান করেন তিনি।