জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলনে দেশের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ অদম্য-২৪ উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান স্তম্ভটি উদ্বোধন করেন।
অদম্য-২৪ উদ্বোধনের পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলনের দুটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে উপদেষ্টা ও অতিথিদের সামনে হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতা নবীনুর রহমান নবীন, রাশিদুল ইসলাম রোমান, শাহারিয়ার রোমিম হট্টগোল ও চিৎকার শুরু করেন। পরে কয়েকজন শিক্ষক তাদেরকে থামান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হট্টগোলের সময় তারা চিৎকার করে বলছিলেন, ডকুমেন্টারিতে তাদের ছবি রাখা হয়নি। তাদেরকে বাদ দেওয়া হয়ছে।
তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলছেন, ডকুমেন্টরিতে ছাত্রদলের নেতা হামিদুল্লাহ সালমান, আফফান আলীসহ কয়েকজনের ছবি এবং সালমানের বক্তব্য রয়েছে। এছাড়া শাখা ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় আরও কয়েকজনের ছবিও তারা দেখেছেন।
এসব বিষয়ে ডকুমেন্টারিটির পরিচালনায় যারা ছিলেন তারা বলছেন, তারা খুবই কম সময় পেয়েছেন ডকুমেন্টারিটি তৈরি করতে। এ সময়ের মধ্যে তারা বিভিন্ন শিক্ষার্থী, আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিবর্গ এবং ফেসবুকের মাধ্যমে ছবি সংগ্রহ করেছেন। ডকুমেন্টারিটি মূলত জুলাই আন্দোলনে প্রতিটা দিনের কর্মসূচির ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। কয়েকটি কর্মসূচির ছবি চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। যারা আন্দোলনের সময় ব্যানারের সামনের সারিতে ছিলেন তাদের ছবি বেশি মনে হয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত ছবি বা ভিডিও পাওয়া যায়নি। এখানে কোনো দল বা বিশেষ ব্যক্তিকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদ দেওয়া হয়নি।
স্মৃতিস্তম্ভটি উদ্বোধনের পর আলোচনা সভায় উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, আজকে যে একটি বিশেষ পরিস্থিতি আমরা দেখেছি এটাও জাহাঙ্গীরনগরের বৈশিষ্ট্য। এটা চব্বিশের অর্জন, এটাকে খারাপ ভাবে দেখার সুযোগ নেই। প্রত্যেকটি কাজের মধ্যে ভুল থাকতে পারে এখানে শিক্ষার বিষয় রয়েছে ঠিক একই সঙ্গে প্রতিবাদ করার ভাষা যেটা সেখানেও শিক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সমালোচনা এবং কুৎসার পার্থক্য শিখবে এবং একই সাথে পূজা ও প্রশংসার পার্থক্য শিখবে এবং শেখাবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী সরকারের অধীনে যে স্বাধীনতা হারিয়েছি, বৈষম্যমূলক সমাজে বসবাস করেছি তার অবসান হয়েছিল বলে আমরা ধরে নিয়েছিলাম এই চব্বিশের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। আমি আংশিক ভাবে এটার সাথে একমত যে আমাদের একটা শুভসূচনা হয়েছে কিন্তু বৈচিত্রের নামে আমরা যে বিভাজন তৈরি করে যাচ্ছি তার মাধ্যমে আমরা পরাজিত শক্তিকে আহ্বান করছি। এ জাতির সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের অভ্যুত্থানের পরেও চব্বিশে এ দেশের মানুষকে আবার রক্ত দিতে হয়েছে। এ জাতির সবচেয়ে বড় শিক্ষার বিষয় হচ্ছে ভুল থেকে শিক্ষা না নেওয়া।