বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটা পুনর্বহালের পাঁয়তারা করছে: ছাত্র ইউনিয়ন

Site Favicon প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২৫ ১৪:৩৪
A+A-
Reset

অবিলম্বে বৈষম্যমূলক পোষ্যকোটা বাতিল এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য সীমিত পরিসরে কোটা রাখার দাবি জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের নেতাকর্মীরা।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ দাবি জানান। ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের দপ্তর সম্পাদক মো. রেদওয়ান সিকদার স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কোটার মত বৈষম্যপূর্ণ প্রথা বাতিলের দাবিতে আপামর ছাত্র-জনতা প্রাণ দিয়েছে। সেই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শক্তির পতনের এক বছর হতে চললেও, এই অযৌক্তিক কোটা ব্যবস্থা থেকে রেহাই পায়নি শিক্ষার্থীরা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই কোটা অস্থায়ীভাবে স্থগিত করলেও এখন পর্যন্ত স্থায়ী কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটা পুনর্বহালের পাঁয়তারা করছে। এটি প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতা, অস্বচ্ছতা এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চরম প্রতারণার পরিচয় বহন করে।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি অদ্রি অংকুর এবং সাধারণ সম্পাদক ফাইজান আহমেদ অর্ক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, পোষ্য কোটা পুনর্বহাল মানে হল- শিক্ষার ন্যায্যতা ও সমানাধিকারে হস্তক্ষেপ, জুলাইয়ের শহীদদের প্রতি চরম অবমাননা, এবং শ্রেণিগত বৈষম্যকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে টিকিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র। শিক্ষকের সন্তান কিংবা কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য কোটা রাখা একেবারেই অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য। তারা আর্থ-সামাজিকভাবে সুবিধাভোগী, ফলে উচ্চশিক্ষার জন্য তাদের আলাদা সুবিধা দেওয়া মানেই গরিব ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার পথ বন্ধ করা।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রম সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন, তবে তারা যেই বেতন কাঠামোর আওতায় চাকরি করেন, সেই অপ্রতুল আয়ের কারণে তারা সন্তানদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাই অনেক কষ্টে চালাতে পারেন, উচ্চশিক্ষার খরচ বহন করা তাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। ভর্তি ফি, আবাসন, শিক্ষা উপকরণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচের ভার তাদের জন্য চূড়ান্ত রকমের আর্থিক চাপ তৈরি করে। ফলে উচ্চশিক্ষা তাদের সন্তানদের জন্য প্রায় অধরা স্বপ্নে পরিণত হয়। এই বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা মনে করি- শুধুমাত্র ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য সীমিত পরিসরে কোটা রাখা যেতে পারে, যাতে তারা আর্থসামাজিক বৈষম্যের শিকার না হয়ে উচ্চশিক্ষায় প্রবেশের একটি ন্যায্য সুযোগ পান। তবে এই কোটা কোনোভাবেই শিক্ষকের সন্তান বা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সন্তানের মতো সুবিধাভোগী শ্রেণির সঙ্গে এক কাতারে ফেলা যাবে না। প্রকৃত প্রান্তিকদের জন্য সংরক্ষিত সুযোগ যাতে আবারও বৈষম্যের হাতিয়ার না হয়ে দাঁড়ায়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।

Top Selling Multipurpose WP Theme

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয় একটি ন্যায়ভিত্তিক, সাম্যের প্রতিষ্ঠান। এখানে কোনওভাবে জন্মসূত্রে সুবিধা নির্ধারণের সুযোগ থাকা উচিত নয়। যারা জাতির স্বার্থে শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে হলে অবিলম্বে পোষ্য কোটা স্থায়ীভাবে বাতিল করতে হবে। কোটার পুনর্বহাল সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের সামনে প্রকাশ করতে হবে।

আপনার পছন্দ হতে পারে