কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রধান ফটকের দক্ষিণ পাশে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর ফলক সংবলিত পোড়ামাটির ফলক থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ফলকটি ভাঙা হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না প্রশাসনের কেউই।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেল পাঁচটার দিকে পর্দা টানিয়ে পোড়ামাটির ফলক ভাঙার কাজ শুরু করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পোড়ামাটির ফলকটির শেখ মুজিবুর রহমানের হাতের অংশটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পোড়ামাটির ফলকটি ভাঙার কাজ করেছে ‘স্মার্ট কনস্ট্রাকশন’। ভাঙার সময় উপস্থিত ছিলো স্মার্ট কনস্ট্রাকশনের সায়েম হোসেন নামের একজন প্রকৌশলী।
উপস্থিত সায়েম হোসেন বলেন, ‘আমাকে আমার এমডি স্যার ভাঙার জন্য বলেছেন। তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, এজন্য এসেছি।’
স্মার্ট কনস্ট্রাকশন এর এমডি আহসানুল কবীর বলেন, ‘আমাকে প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে ভাঙতে। গেটের নির্মাণ কাজ আমরাই করেছিলাম। প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম আমাকে ভাঙার জন্য মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু তিনি এখন বিষয়টিকে অস্বীকার করছেন। আমি এটা ঠিক করে দিব।’
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী এস এম শহিদুল ইসলাম অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি অনুমতি দেওয়ার কেউ না। আপনি প্রশাসনের সাথে কথা বলুন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল হাকিম বলেন, ‘আমি তো এ বিষয়ে কিছু জানি না। প্রকৌশল দপ্তরে খোঁজ নিয়ে দেখেন। তারা এ বিষয়টি বলতে পারবেন।’
রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পোড়ামাটির ফলক ভাঙার বিষয়টি আমার জানা নাই। কে বা কারা অনুমতি দিয়েছেন এটাও আমি জানি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী বলেন, ‘আমি এখানে আসার পর শুনেছিলাম এটা নতুন করে পুনরায় নির্মাণ করা হবে। তবে এ বিষয়ে প্রশাসনিক কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।’
যারা ভেঙেছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবেন কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি একা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবো না। প্রশাসনের সবার সাথে কথা বলে এরপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে প্রায় ২ কোটি টাকা খরচে মূল ফটকের কাজ শুরু হয়। যেটিতে পোড়মাটির ফলকে ভাষা আন্দোলন, জাতীয় শহীদ মিনার, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র লড়াই, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ, ৭ বীরশ্রেষ্ঠের প্রতিকৃতি, স্বাধীন বাংলাদেশে পতাকা হাতে বিজয় উল্লাস বা পাশের ফলকে জাতীয় সংসদ ভবন, শালবন বৌদ্ধবিহার, বাঘা মসজিদ, হাডুডু, ফুটবল, ক্রিকেটসহ গান-নৃত্য ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীদের জীবন সংগ্রাম দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়।