দেশের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সৎ ও দেশপ্রেমিক ব্যবসায়ীদের চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসের কবল থেকে আমরা রক্ষা করব।
তিনি বলেন, আগের আমলে আমরা দেখেছি, গুটি কয়েক ব্যবসায়ী মাফিয়ায় পরিণত হয়েছিল। সেই মাফিয়াদেরকে এখন একটি রাজনৈতিক দল প্রশ্রয় দিচ্ছে, সমর্থন দিচ্ছে। অন্যদিকে আমাদের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও খেটে-খাওয়া ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজদের তাড়নায় বেহাল অবস্থায় রয়েছেন।
শুক্রবার (১১ জুলাই) দিবাগত রাতে খুলনা মহানগরীর শিববাড়ি মোড়ে এনসিপি আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গণঅভ্যুত্থান অসমাপ্ত রয়ে গেছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা বলেছি-জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কোনো শেষ ছিল না, কোনো সমাপ্তি ছিল না। জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল নতুন বাংলাদেশের শুরু। ছাত্র, তরুণ ও শ্রমিকের আন্দোলনের শুরু। সেই আন্দোলন আমাদেরকে চলমান রাখতে হবে। আমরা বলে দিতে চাই, নতুন বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠায়, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণঅভ্যুত্থানের সব ছাত্র-তরুণ এখনও মাঠে রয়েছে। আপনারা যতোই চেষ্টা করেন, যতোই ষড়যন্ত্র করেন আমাদেরকে মাঠ থেকে সরাতে পারবেন না। আমরা মাঠে থাকব-ইনশাল্লাহ।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পার করছি। কিন্তু আজকে ঢাকায় এবং খুলনায় বীভৎস ঘটনা ঘটেছে। চোখে দেখার মতো না এই ঘটনা। শৈশবে আমরা লগি-বৈঠার তাণ্ডব দেখেছিলাম। রাজনৈতিক সহিংসতা আমরা দেখেছিলাম। একটা গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের এগুলো আবার দেখতে হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য কষ্টের।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পরে আমরা বলেছিলাম, যেই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা মাফিয়া তৈরি করে, সেই ব্যবস্থা দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয় দেয় এবং সন্ত্রাসীদের তৈরি করে। যেই ব্যবস্থা জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, সেই ব্যবস্থা পুলিশ বাহিনীকে খুনি বাহিনীতে রূপান্তরিত করে। সেই ব্যবস্থার বিলোপ ঘটাতে হবে। সেই ব্যবস্থার পতন ঘটিয়ে নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গঠন করতে হবে। কিন্তু নানাভাবে ৫ আগস্ট থেকে ষড়যন্ত্র হয়েছে এই ছাত্রদের বিরুদ্ধে। আমরা দেখেছিলাম, ৫ আগস্ট কারা ক্যান্টনমেন্টে গিয়েছিল। অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দদের বাদ দিয়ে সরকার গঠনের পরিকল্পনা করেছিল। এই ছাত্র নেতৃবৃন্দ অনেক চেষ্টা করেছে এই সরকারকে এই সময়ের রাজনীতিকে গণঅভ্যুত্থানের দিকে আনতে। কিন্তু নানা পক্ষ যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে থাকলেও নতুন বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে নেই। তারা পুরনো বন্দোবস্তের পক্ষে আছে। পুরনো বন্দোবস্ত টিকিয়ে রাখার জন্য তারা সবকিছুই করে যাচ্ছে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।